চোরাচালান ঠেকাতে 'ডগ স্কোয়াড'।
চোরাচালান ঠেকাতে বিমানবন্দরে যাত্রীদের লাগেজ ও কার্গো পণ্য পরীক্ষায় এবার গঠন করা হচ্ছে 'ডগ স্কোয়াড'। শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রণে থাকবে প্রশিক্ষিত কুকুরের দল। বিশেষায়িত এ ইউনিটটি গঠনের ব্যাপারে এরই মধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন মিলেছে। অনধিক এক বছরের মধ্যেই নিজস্ব ডগ স্কোয়াড দিয়ে কার্যক্রম পরিচালনার আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে তার আগে র্যাবের ডগ স্কোয়াডকেদিয়ে অভিযান চালানো হবে। এ ব্যাপারে শিগগিরই র্যাবের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক সই হবে বলেও জানালেন শুল্ক গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। এর মধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে গতকাল বুধবার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে র্যাবের ডগ স্কোয়াড দিয়ে যাত্রীদের লাগেজ ও মালপত্র পরীক্ষা করা হয়। এ ব্যাপারে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান সমকালকে বলেন, মাদক-বিস্ফোরকসহ সব ধরনের পণ্য চোরাচালান ঠেকাতে ডগ স্কোয়াড কার্যকরভূমিকা পালন করবে বলে আশা করা হচ্ছে। দায়িত্ব পালনরত কর্মকর্তাকে হয়তো অপরাধীরা 'ম্যানেজ' করতে পারে, কিন্তু ডগ স্কোয়াডকে সুপারিশ করে কোনো লাভ হবে না। শুধু শাহজালাল নয়, অন্যান্য বিমানবন্দরেও প্রয়োজনে ডগ স্কোয়াডকে কাজে লাগান হবে। ঢাকা কাস্টম হাউসের কমিশনার লুৎফর রহমান সমকালকে বলেন, বিমানবন্দরে আসা বিপুল লাগেজ ও কার্গো পণ্য কর্মকর্তাদের পক্ষে সুচারুভাবে পরীক্ষা করা সম্ভব হয় না। তাই ডগ স্কোয়াড থাকলে তাদের দিয়ে সহজে সন্দেহজনক চালান আলাদা করা যাবে। পরে সেগুলো পুঙ্খানুপুঙ্খ পরীক্ষা করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হবে।
কাস্টমস ও শুল্ক গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের উদ্যোগে ডগ স্কোয়াড গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়। এরই মধ্যে এ ব্যাপারে ধারণাপত্র তৈরি করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ডগ স্কোয়াডের জন্য ছয়টি প্রশিক্ষিত কুকুর কেনা এবং ব্যবস্থাপনার জন্য ১০ জনকে নিয়োগ দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। এ ইউনিটের জন্য স্থান বরাদ্দের প্রক্রিয়াও চলছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, অনেক সময় ইলেকট্রনিক সরঞ্জাম বা বিলাসদ্রব্যের ভেতরে লুকিয়ে নিষিদ্ধ পণ্য আনা হয়। কয়েকবার এমন কায়দায় আনা স্বর্ণের চালান ধরা পড়েছে। এ সব ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সরঞ্জাম ওপর থেকে দেখে বোঝার কোনো উপায় থাকে না। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে চালানের কোনো পণ্য পুরোপুরি খোলার পরই কেবল তা জানা যায়। কিন্তু ডগ স্কোয়াডের কুকুরগুলো মূলত গন্ধ শুঁকে নিষিদ্ধ পণ্য শনাক্ত করবে। তাই খোলার আগেই সন্দেহজনক চালানটি আলাদা করা যাবে। বিশেষ করে বিস্ফোরকের মতো ঝুঁকিপূর্ণ কিছু থাকলে ডগ স্কোয়াড আগেই ধারণা দিতে পারবে। বিমানবন্দরে আসা যাত্রীদের লাগেজ পরীক্ষায় এই স্কোয়াডকে কাজে লাগানো হবে। কার্গো ভিলেজে যত গাড়ি ঢুকবে এবং বের হবে তার সবই ডগ স্কোয়াড দিয়ে পরীক্ষা করানো হবে। এতে চোরাচালানের পণ্য শনাক্ত করা সহজ হবে।র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার সহকারী পরিচালক মেজর মাকসুদুল আলম সমকালকে বলেন, শুল্ক গোয়েন্দার পক্ষথেকে বুধবার র্যাবের ডগ স্কোয়াড চেয়ে পাঠানো হয়। পরে তারা ডগ স্কোয়াডকে দিয়ে শাহজালাল বিমানবন্দরে লাগেজ ও কার্গো ভিলেজের মালপত্র পরীক্ষা করে। এ সময় বিস্ফোরক সন্দেহে একটি পাউডারের প্যাকেট জব্দ করে পরীক্ষার জন্য র্যাবের ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়। তবে পরীক্ষায় দেখা যায়, সেগুলো বিস্ফোরক নয় ।
কোন মন্তব্য নেই: